আপনার পিঠের ব্যথার জন্য কি কিডনিকে দায়ী করছেন? আসুন জেনে নিন

আপনার পিঠের ব্যথা কি কিডনির কারণে হয়?




কিডনি মানব শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রেচনতন্ত্রের মাধ্যমে প্রধানত বর্জ্য এবং বিষাক্ত পদার্থের রক্তকে শুদ্ধ করে এবং শরীর থেকে প্রস্রাব করে। এটি যেহেতু বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে, তাই এর স্বাস্থ্যই আমাদের জন্য অত্যাবশ্যক। পিঠের ব্যথা এবং কিডনির সমস্যা দুটি বিষয়ের সম্পর্কে অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকে যখন পিঠে ব্যথা অনুভব করেন, তারা এটি কিডনির সমস্যার সাথে সম্পর্কিত না মনে করে পুরোপুরি অন্য কোনো সমস্যার দিকে মনোনিবেশ করেন। সেরা হাসপাতালের রিপোর্ট থেকে বুঝা গেছে যে, এই ধারণা সত্যিই ভুল হতে পারে। অনেক রোগী যারা পিঠে ব্যথা অনুভব করে হাসপাতালে আসেন, তাদের কিডনিতে পাথরে ভুগছেন যা কিডনি ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে, পিঠের ব্যথা অনুভব করলে সরাসরি কিডনি সমস্যার সনাক্ত করার জন্য নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। একটি স্বাস্থ্যকর ও সুস্থ জীবনের জন্য, কিডনির যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। যদিও পিঠের ব্যথা এবং কিডনির সমস্যা সম্পর্কিত না, তবুও সমস্যার সমাধানের জন্য সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। এমনকি সাধারণ মনে হলে আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগে কাউকে দেখানো উচিত।


কিডনি পাথর  কি?


কিডনি পাথর, অথবা রেনাল ক্যালকুলি, কিডনির আস্তরণে ক্যালসিয়াম অক্সালেট এবং স্ট্রুভাইটের মতো দ্রবীভূত খনিজ পদার্থের জমা হওয়া ক্লাম্প বা শক্ত জমা গঠন করে। এই পাথরের আকার বিভিন্ন হতে পারে, যেমন গল্ফ বলের মতো বড় হতে পারে বা ছোট হতে পারে। ছোট পাথর সাধারণত অলক্ষিত হয় এবং প্রস্রাবের সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, যেখানে বড় পাথর মূত্রনালীতে আটকে যেতে পারে এবং অপসারণ করতে হতে পারে।

কিডনি পাথরের হলে কিছু ঝুঁকির কারণ রয়েছে যা বেশি পাথর গঠনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সেগুলি হল:

১. কিডনি পাথরের একটি পারিবারিক বা ব্যক্তিগত ইতিহাস: যদি আপনার পরিবারে কেউ আগে কিডনি পাথরে আক্রান্ত হন, তবে আপনার কিডনি পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

২. ডিহাইড্রেশন: যখন শরীর পর্যাপ্ত পানি পায় না, তখন ক্যালসিয়াম অক্সালেট এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থের জমা বেড়ে যায়, যা কিডনি পাথর গঠনের সাথে সংযুক্ত।

৩. প্রোটিন, লবণ এবং চিনির অতিরিক্ত গ্রহণ: এই উপাদানগুলির অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, যা কিডনি পাথর গঠনের ঝুঁকি বাড়ায়।

৪. স্থূল ব্যক্তি: ওজনের বাড়ানোর সম্ভাবনা থাকলে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়ায়, যা কিডনি পাথর গঠনের ঝুঁকি বাড়ায়।

মুম্বাইয়ের সমস্ত নেতৃস্থানীয় ইউরোলজি হাসপাতালে কিডনি পাথরের চিকিৎসা উপলব্ধ। এ অবস্থায়, উপযুক্ত চিকিৎসা ও পরামর্শ পেয়ে মূল্যবান সহায়তা পেতে হবে।




কিডনির ব্যথা চেনার উপায় কী?





 কিডনির ব্যথা চেনার উপায় কী?


কিডনি সম্পর্কিত ব্যথা সনাক্ত করা অসহজ হতে পারে, কারণ এটি ধীরে ধীরে বা অস্পষ্টভাবে অনুভূত হতে পারে। তবে, কিছু মৌখিক সতর্কতা মানুষের কিডনি সমস্যা সনাক্তে সাহায্য করতে পারে:

অনুভূত ব্যথা: কিডনি সম্পর্কিত ব্যথা সাধারণত পেটে বা পিঠে অনুভব করা হয়। এই ব্যথা হলে নিকটস্থ কোনও অন্যান্য মেডিকেল সমস্যার সাথে তুলনা করে দেখা উচিত।

বিকিরণের বিক্রিয়া: কিডনি সমস্যা সম্পর্কিত ব্যথা কিছু সময় বিকিরণ করতে পারে। এই বিকিরণের অনুমান করা হতে পারে যে ব্যথার মূল কারণ কিডনি সম্পর্কিত হতে পারে।

পাথরের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যথা: কিডনি পাথর রয়েছে তবে কখনও কখনও এটি অনুভব করা যায় যে ব্যথার কারণ হল পাথর। এই ক্ষেত্রে, সাধারণত তীব্র এবং তীক্ষ্ণ ব্যথা অনুভব করা হয়।

অস্বাভাবিক মূত্রপাথের সমস্যা: কিডনি সমস্যা হলে মূত্রপাথে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যা ব্যথা উত্পন্ন করতে পারে।

তীব্রতা ও সময়: কিডনি সংক্রামিত হওয়ার পরে ব্যথা হালকা অথবা গুরুতর হতে পারে এবং এটি সাময়িক বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

কোনও অবস্থায়, যদি আপনি কিডনি সম্পর্কিত ব্যথা অনুভব করেন, তবে সর্বশেষে একজন চিকিত্সকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। উপযুক্ত চিকিত্সা প্রদান করা না হলে, কিডনি সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব থাকতে পারে, যা কম হার্ম বা মৃত্যুর উপযুক্ত হতে পারে।




কিডনির ব্যথা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা কী?


যেকোনো কিডনি সমস্যা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অত্যাবশ্যক। তবে, কিডনির ব্যথার লক্ষণ সম্পর্কে সাধারণভাবে অবগত হওয়া উচিত। কিডনির সমস্যার লক্ষণ হতে পারে: পিপাসা, বমি করা, পুঁটকি, কোমর বা কোমরের পাশে ব্যাথা, প্রস্রাবে পরিবর্তন এবং উল্বাণ অনুভব।

প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে নিম্নলিখিত কাজগুলি করা হতে পারে:

পরামর্শের জন্য ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

নিয়মিতভাবে পানি পান করুন এবং পানি পর্যাপ্তভাবে পান করার সুপারিশ করা হতে পারে।

নিয়মিতভাবে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।

প্রেসার, ডায়াবেটিস ইত্যাদি যে কোন অন্যান্য মূল সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং নিয়মিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করুন।

এছাড়াও, আপনার ডাক্তার যে কোন প্রয়োজনীয় পরীক্ষা বা পরামর্শ নির্দেশ করতে পারেন। সাধারণত, এই ধরনের সমস্যা সম্পর্কে ডাক্তার প্রেসক্রাইব করা ঔষধের বা চিকিৎসার পরামর্শ দেয়।



পিঠের ব্যথা কিভাবে চিহ্নিত করবেন?


পিঠের ব্যথা চিকিৎসা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রথমেই, এটি জরুরি স্থিতিতে অনুভব করা হলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। ধারণকরা যেতে পারে যে পিঠের ব্যথার হিসাবে কোন গভীরভাবে নষ্ট অথবা বিপদের অবস্থা হতে পারে।

ডাক্তারের সাথে যোগাযোগের পরে, প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী বিশেষ পরামর্শ পাওয়া উচিত। অনেক সময় পিঠের ব্যথা কার্যকর বিশ্রাম এবং পানি পানের মাধ্যমে প্রশমিত হতে পারে।

যদিও, যদি পিঠের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী এবং ক্রোধ করে, তবে নিজেকে ডাক্তারের দেখাতে বাধ্য করা উচিত। ডাক্তার প্রকৃতপক্ষে আপনার ব্যথার কারণ উপরে পরীক্ষা করবেন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার পরামর্শ দিবেন।

একাধিক ক্ষেত্রে, ডাক্তার কর্তৃক প্রেস্ক্রিপ্ট করা ওষুধ বা থেরাপি কর্তৃক পরামর্শ দেওয়া হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, সাধারণ প্রয়োজনীয়তা নেই এবং বিশেষ বিশ্রাম এবং কাস্টামাইজড ওষুধ দ্বারা পিঠের ব্যথা নির্ধারিত হতে পারে।

সম্পূর্ণ চিকিৎসার প্রক্রিয়াতে নিজের অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবান জীবনযাপন এবং সঠিক পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত।



কিডনি সমস্যার প্রথম লক্ষণ কি?


কিডনি সমস্যা একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা যা ধীরে ধীরে অনুভব করা যায়। এই সমস্যার প্রথম লক্ষণগুলি সাধারণত অন্যান্য সমস্যাগুলির সাথে বিভ্রান্ত হতে পারে, তবে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণগুলি আছে যেগুলি সাক্ষাৎকারকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে:

অনিয়মিত মূত্রত্যাগ: একজন ব্যক্তির মূত্রত্যাগের পরিমাণ এবং সংখ্যা অদৃশ্যভাবে বা অনিয়মিতভাবে বাড়তে পারে, যা সাধারণত একজন ব্যক্তির প্রতিদিনের সাধারণ মূত্রত্যাগের পরিমাণ থেকে বেশি হয়।

ব্যাথা ও অত্যন্ত ব্যথা: কিডনি সমস্যার কারণে পেটে এবং পুরো পিঠে ব্যাথা হতে পারে, যা অত্যন্ত আঘাতজনক হতে পারে।

পিশাচ্ছুতা বা উচ্চ রক্তচাপ: কিডনি সমস্যা একজন ব্যক্তির রক্তচাপ বা পিশাচ্ছুতা বাড়াতে পারে, যা হার্ট অ্যাটাক, অবশ্যাত আক্রান্ত অথবা হৃদরোগের জন্য একটি ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

মূত্রধারার সাদা বা মিল্কি রং: কিডনি সমস্যার কারণে মূত্রধারার রঙ পাতলা ও সাদা বা মিল্কি হতে পারে, যা একটি মূত্রনালী সমস্যার সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে।

প্রশ্বাসের সমস্যা: কিডনি সমস্যা একজন ব্যক্তির শ্বাসের সমস্যা বা সাধারণত ফোঁটাবাজির জন্য শ্বাস নেওয়ার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

এই লক্ষণগুলির যদিও অন্যান্য কারণগুলির সাথে সংযোগ হতে পারে, কিন্তু যে কোনও ধরণের অস্বাভাবিক লক্ষণ অথবা মূল্যায়নের পরামর্শ স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীর সাথে যোগাযোগের প্রয়োজন রয়েছে।





কিডনি ব্যথা এবং পিঠের ব্যথা দুটির মধ্যে পার্থক্য ও প্রধানত অবস্থানের এবং ব্যথার ধরনে পার্থক্য রয়েছে। কিডনি ব্যথা সাধারণত অনুভূত হয় আপনার পেটের দায়ের অংশে এবং সাধারণত নিচের পিঠে এবং পাঁজরের নীচে ব্যথা প্রদান করে। এর মধ্যে পিঠের ব্যথা একটি বিশেষ অঞ্চলে সীমানা করা হয়, আপনার পাঁজরের নিচের এবং মাথার পিঠের অঞ্চলে।

কিডনি ব্যথা নিশ্চিত করতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করা যেতে পারে:

ডাক্তারের সাথে পরামর্শ: আপনি যখন কোনো কিডনি সংক্রমণের লক্ষণ অনুভব করেন, তখন আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

প্রস্রাব পরীক্ষা: আপনার ডাক্তার আপনাকে প্রস্রাব নিশ্চিত করতে বলবেন, যা কিডনি সংক্রমণের উপস্থিতি নির্ধারণ করে।

রক্ত ​​পরীক্ষা: রক্তের পরীক্ষা করে কিডনি সম্পর্কিত সমস্যা নির্ধারণ করা যেতে পারে।

ইমেজিং পরীক্ষা: আপনার ডাক্তার আপনাকে ইমেজিং পরীক্ষা করার অনুরোধ করতে পারেন, যেমন আল্ট্রাসাউন্ড বা এমআরআই, যা কিডনির অবস্থা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।

সর্বশেষে, আপনার ডাক্তার পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে উপযুক্ত চিকিত্সা পরামর্শ প্রদান করবেন। নিয়মিত চেকআপ এবং ডাক্তারের নির্দেশনা অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার স্বাস্থ্য ও কিডনির সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে সাহায্য করবে।

A KUNDU

Post a Comment

Previous Post Next Post